ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন। অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি মূলত কৃষ্ণ ভক্তি এবং গৌরাঙ্গের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গঠিত।
ইসকন
বিশ্বজুড়ে কৃষ্ণ কনশাসনেসকে প্রচার করছে,
যেখানে নিরামিষ আহার, ভূমি সংগঠন
এবং সার্বজনীন শ্রীকৃষ্ণ দর্শন প্রতিষ্ঠা করে। তাদের উপাসনালয়, মন্দির, শিবির
এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা
করে।
ইসকন বা "ইন্টারন্যাশনাল Society for Krishna Consciousness" একটি ধর্মীয় সংগঠন যা হিন্দু ধর্মের বৈষ্ণব ভাবধারার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। এটি ১৯৬৬ সালে অ্যাহর দ্বারকা প্রভুপাদ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়।
যিনি এই সংগঠনটি চালান, তিনি হলেন প্রভুপাদের নির্দেশিত নেতৃত্বের অধীনে কাজ করা বিভিন্ন উত্তরাধিকারী। বর্তমানে, এই সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী পরিচালনা করে, যার মধ্যে বোর্ডের সদস্য এবং গুরুরা অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশে, ইসকনের উদ্দেশ্য হলো কৃষ্ণচেতনা প্রচার করা, সৎকার্য এবং ভক্তির মাধ্যমে ধার্মিক জীবনযাপন করা। তারা শাস্ত্রীয় শিক্ষা, সেবামূলক কার্যক্রম, এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে।
প্রথমেই বললে, ইসকন ঠিক হিন্দুদের সংগঠন নয় বরং এটি হিন্দুবেশধারী কিছু ইহুদিদের সংগঠন। আবু রুশদ তাঁর লেখা "বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধানদের কথা- বাংলাদেশে ‘র’" এ উল্লেখ করেছেন যে,
"বাংলাদেশে ‘ইসকন’
নামে একটি সংগঠন কাজ
করছে। এর সদর দফতর
নদীয়া জেলার মায়াপুরে অবস্থিত। মূলত
এটি একটি ইহুদীদের সংগঠন
হিসেবে পরিচিত। এই সংগঠনের মূল
কর্মকান্ড হলো বাংলাদেশে উস্কানিমূলক ধর্মীয়
অনুষ্ঠান আয়োজন করা, যার
উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি।" (বই: বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার
সাবেক প্রধানদের কথা- বাংলাদেশে ‘র’,
পৃষ্ঠা ১৭১)।
আপনাদের জানানো দরকার, ইসকনের উৎপত্তি ভারতে নয়, বরং আমেরিকার নিউইয়র্কে, মাত্র ৫০ বছর আগে, ১৯৬৬ সালে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। অবাক করা বিষয় হলো, তিনি ভারতে কোন হিন্দু শিক্ষালয়ে শিক্ষা নেননি; বরং তাঁর শিক্ষা হয়েছে খ্রিস্টানদের চার্চে।
পেশায় তিনি ছিলেন ফার্মাসিউটিক্যাল ব্যবসায়ী, তবে হঠাৎ করে কেন এবং কী কারণে হিন্দু ধর্মের নতুন একটি সংস্করণের দিকে ঝুকে পড়লেন, তা সত্যিই চিন্তার বিষয়। স্বামী প্রভুপাদ যখন নতুন ধরনের হিন্দু সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলেন, তখন মূল ধারার সনাতন হিন্দুরা প্রথমেই তার বিরোধিতা শুরু করেন। অধিকাংশ হিন্দুই তার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ছিলেন। তবে সেই সময়ে তার পাশে এসে দাঁড়ান জে. স্টিলসন জুডা, হারভে কক্স, ল্যারি শিন এবং টমাস হপকিন্সের মতো চিহ্নিত ইহুদী-খ্রিস্টান ব্যক্তিত্বরা।
ইসকন একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন। এ সংগঠনটির বেসিক কনসেপ্ট মধ্যযুগের চৈতন্য’র থেকে আগত। চৈতন্য’র অনতম থিউরী হচ্ছে- “নির্যবন করো আজি সকল ভুবন”। যার অর্থ- সারা পৃথিবীকে যবন মানে মুসলমান মুক্ত করো।
উল্লেখ্য- এ সংগঠনটি হিন্দুদের অধিকাংশ বেসিক কনসেপ্ট স্বীকার করে না। তারা হিন্দুদের উপর সম্পূর্ণ নিজস্ব কনসেপ্ট চাপিয়ে দেয়। এদের চেনার সহজ উপায়- এরা সব সময় ইউরোপীয় সাদা চামড়াদের সামনে নিয়ে আসে। সংগঠনটি মুলত এনজিও টাইপ। এরা নিম্নবর্ণের হিন্দুদের দলে ভিড়িয়ে দল ভারি করে। এ কারণে তাদের আস্তানাগুলো হয় নিম্নবর্ণের হিন্দুদের আস্তানার পাশে। যেমন ঢাকা শহরে স্বামীবাগ মন্দিরের পাশে ইসকন মন্দির হওয়ার কারণ, স্বামীবাগে রয়েছে বিশাল মেথর পট্টি। এই মেথর পট্টির নিচুবর্ণের হিন্দুদের নিয়ে তারা দল ভারি করে। সিলেটেও ইসকনদের প্রভাব বেশি। কারণ চা শ্রমিকদের একটি বিরাট অংশ নিচু বর্ণের হিন্দু। এদেরকে দলে নিয়ে সহজে কাজ করে তারা।
বর্তমানে ইসকন চালায় ডাইরেক্ট ইহুদীরা। ইসকনের মূল নীতিনির্ধারকদের প্রায় অর্ধেক হচ্ছে ইহুদী। এটি আমার কোন দাবি নয়, এক ইসকন নেতারই দাবি।
বাংলাদেশে ইসকন কি চায় ও কি করে ??
স্বাভাবিকভাবে ইসকনের কর্মকাণ্ড শুধু নাচ মনে হলেও আদৌ তা নয়। ইসকনের কয়েকটি কাজ নিম্নরূপ-
১) বাংলাদেশে সনাতন মন্দিরগুলো দখল করা এবং সনাতনদের মেরে পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়া। যেমন স্বামীবাগের মন্দিরটি আগে সনাতনদের ছিলো, পরে ইসকনরা কেড়ে আগেরদের ভাগিয়ে দেয়। এছাড়া পঞ্চগড়েও সনাতনদের পিটিয়ে এলাকাছাড়া করে ইসকনরা। ঠাকুরগাও-এ সনাতন হিন্দুকে হত্যা করে মন্দির দখল করে ইসকন। এছাড়া অতিসম্প্রতি সিলেটের জগন্নাথপুরে সনাতনদের রথযাত্রায় হামলা চালিয়েছে ইসকন নেতা মিণ্টু ধর।
২) বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে সাম্প্রদায়িক হামলা করা। কিছুদিন আগে ঢাকাস্থ স্বামীবাগে মসজিদের তারাবীর নামাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো ইসকন। নামজের সময় ইসকনের গান-বাজনা বন্ধ রাখতে বলায় তারা পুলিশ ডেকে এনে তারাবীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এবার হলো সিলেটে।
৩) বাংলাদেশে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সংগঠন তৈরী করে, উগ্রহিন্দুত্ববাদের বিস্তৃতি ঘটানো। যেমন- জাতীয় হিন্দু মহাজোট, জাগো হিন্দু, বেদান্ত, ইত্যাদি। বর্তমান অনলাইন জগতে যে ধর্ম অবমাননা তার ৯০% করে ইসকন সদস্যরা।
৪) বাংলাদেশে সম্প্রতিক সময়ে চাকুরীতে প্রচুর হিন্দু প্রবেশের অন্যতম কারণ-ইসকন হিন্দুদের প্রবেশ করানোর জন্য প্রচুর ইনভেস্ট করে।
৫) সিলেটে রাগীব রাবেয়া মেডিকলে কলেজের ইস্যুর পেছনে রয়েছে ইসকন। ইসকন আড়াল থেকে পুরো ঘটনা পরিচালনা করে এবং পঙ্কজগুপ্তকে ফের লেলিয়ে দেয়। এখন পঙ্কজগুপ্ত জমি পাওয়ার পর সেই জমি নিজেদের দখলে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিচারবিভাগে ইসকনের প্রভাব মারাত্মক বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ খোদ প্রধানবিচারপতিও একজন ইসকন সদস্য।
সবার শেষ কথা হচ্ছে- বাংলাদেশে যদি এখনই ইসকনকে নিষিদ্ধ না করা হয়, তবে বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে, যেই বিপদে বাংলাদেশে স্বাধীনতা হারালেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
Comments
Post a Comment